আজ বুধবার, ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আড়াইহাজারে শিশুধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদীকে হত্যার হুমকি

আড়াইহাজারে শিশুধর্ষণকারীর

আড়াইহাজারে শিশুধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদীকে হত্যার হুমকিআড়াইহাজারে শিশুধর্ষণকারীর

সংবাদচর্চা ডেস্ক:

আড়াইহাজার উপজেলায় গত ১৯ ফ্রেব্রুয়ারী আড়াইহাজারে চকলেটের লোভ দেখিয়ে ৬ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করে পাশের বাড়ির বাড়িওয়ালা দেলোয়ার হোসেন দেলু। দেলোয়ার, উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ইদবারদী এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।

মামলা করায় বাদীকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেন“মাইয়াতো মরছেই, তুই ও কি মরতে চাস? ঝামেলা করিস না। দশ হাজার টাকা রাইখা মামলাটা উঠাইয়া নে। এহন খারাপ কিছু হইয়া গেলে তারপর কি করবি?” ছয় বছরের শিশু সন্তান ধষর্ণের ঘটনায় দায়ের করা মামলা উঠিয়ে নিতে এভাবেই শিশুটির বাবাকে হুমকি প্রদান করেন ধর্ষণকারীর পক্ষের ব্যবসায়ী মোহন মিয়া।

শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, অটোরিক্সা চালক দেলোয়ার হোসেন চকলেটের লোভ দেখিয়ে তাদের ৬ বছরের শিশুটিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ধর্ষণ করে। ২০ ফেব্রুয়ারী এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে আড়াই হাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তারপর থেকেই মামলা উঠিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে দেলোয়ারের পক্ষের লোকজন।

বিভিন্ন সময়ে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয় মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য। প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখে আরও খারাপ কিছু করার হুমকি দেয়া হয়। তাদেরকে বিভিন্নভাবে নজরদারিতে রাখার ফলে মেয়ের চিকিৎসাও করাতে পারছিল না বলে জানান পরিবারের লোকজন।

এরই মধ্যে গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান শিশুটিকে। সেখানে চিকিৎসা শেষে বুধবার আবারো গ্রামে ফিরে আসেন মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী।

নিজেদের দূর্দশার কথা জানিয়ে বলেন, “আমি গাড়ির হেল্পারি করে দিন আনি দিন খাই, বউ জামায় পুথি লাগাইয়া কিছু উপার্জন করতো। এই টাকায়ই সংসার চালাই। গত ১০ দিনে এক টেকাও উপার্জন নাই। উল্টা এনে হেনে টেকা পইসা খরচ কইরা আমি এখন খাওনের টেকা পাই না। মাইয়াডার অবস্থাও বেশি ভালা না। এর মইধ্যে এতো হুমকী ধামকী। আমি এহন চোখে পথ দেহি না স্যার! এই দুনিয়ায় কি মানুষ নাই? আমি কি বিচার পামু না স্যার?”

পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে দেলোয়ারের এক প্রতিবেশী জানায়, মামলার পর পুলিশ দেলোয়ারকে গ্রেফতার করতে আসলে ১০ হাজার ৬শ টাকার বিনিময়ে তারা দেলোয়ারকে গ্রেফতার না করেই চলে যায়। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকজনকে মিমাংসা করার জন্য মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। মোহাম্মদ আলী এলাকার ভাড়াটিয়া হওয়ায় সে একরকম অসহায় অবস্থায়ই অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার উপ পরিদর্শক রফিউদ্দৌলা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গেই তারা আসামীকে গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন। মামলার পরদিন শিশুটিকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল চেক-আপ করানোর পর শিশুটির ২২ ধারায় জবানবন্দী নেয়া হয়েছে।

আসামীপক্ষের হুমকি প্রদান প্রসঙ্গে তার কাছে কোন তথ্য নেই জানিয়ে বলেন, হুমকির সত্যতা যাচাই করে হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান সর্বোচ্চ সক্রীয়তার সঙ্গে তারা মামলার আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ